Saturday, July 28, 2012

মাহে রমজানে রোজা নিয়ে বিস্তারিত জেনে নিন


undefined
ইসলামের মূল পাঁচ ভিত্তির একটি হল রমজান মাসের রোজা। মুসলমানদের প্রিয় মাস " মাহে রমজান "। সর্বসেরা মাসও এটি। এই রমজান আসে মুমিনের জন্য রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের বার্তা নিয়ে। এই রমজান আসে রহমতে পরিপূর্ন করে দিতে। একটি মানুষকে নিষ্পাপ বানিয়ে দিতে। রমজানে মহান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে বান্দার জন্য থাকে অনেক অফার। মহান মনীবের নৈকট্য অর্জনের অন্যতম মাধ্যম এই রমজানের রোজা। তাই সকল মুমিন, মুসলমান এই মাসটির অপেক্ষায় থাকে। দীর্ঘ এগারো মাস অপেক্ষার পরে রজমানে আমাদের মাঝে উপস্থিত। আমরা রমজানকে স্বাগতম জানাচ্ছি " আহলান সাহলান ইয়া শাহরু রমাদান"।

রমজান মাসের রোজা মুসলমানদের জন্য ফরজ। আমরা যেন আল্লাহ ভীতি অর্জন করতে পারি সে জন্য এই রমজানের রোজা ফরজ করা হয়েছে। এই রোজা আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ও ফরজ ছিলো। আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ "হে মুমিনগণ, তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ।যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করতে পার ।(সূরা বাকারা:১৮৩)
আরো এরশাদ হয়েছে-”তোমাদের মধ্যে যে (রমযান) মাসকে পায়, সে যেন রোযা রাখে” (বাকারা ১৮৫)
হযরত সালমান (রাঃ) হতে বণিত আছে, তিনি বলেন প্রিয় নবীয়ে করীম (সাঃ) শাবানের শেষ তারিখে আমাদেরকে নসীহত করেছেন যে, তোমাদের মাথার উপর এমন একটি মর্যাদাশীল মুবারক মাস ছায়া স্বরুপ আসছে, যার মধ্যে শবেকদর নামে একটি রাত্রি আছে, যা হাজার মাস হতেও উত্তম। আল্লাহ তায়ালা সে মাসের রোযা তোমাদের উপর ফরয করেছেন এবং রাত্রি জাগরণ অর্থাৎ তারাবী পড়াকে তোমাদের জন্য পুন্যের কাজ করেছে। যে ব্যক্তি এমাসে কোন নফল কাজ আদায় করল, সে যেন রমযানের বাহিরে একটি ফরয আদায় করল। আর যে এমাসে একটি ফরয কাজ আদায় করল, সে যেন অন্য মাসে সত্তরটি ফরয আদায় করল।

যাদের উপর রোযা ফরজঃ প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক,বালেগ, সুস্থ মস্তিষ্ক সম্পন্ন, মুকিম, সামর্থ্যবান মুসলিমের জন্য সিয়াম পালন ফরজ।
যাদের উপর রোযা ফরজ নাঃ দশ প্রকার মানুষের জন্য রোযা ফরজ না।
১. কাফের বা অমুসলিম। কারণ তারা ইবাদত করার যোগ্যতা রাখে না। ইবাদত করলেও ইসলামের অবর্তমানে তা সহি হবে না, কবুলও হবে না। যদি কোন কাফের রমজানে ইসলাম গ্রহণ করে তবে পিছনের সিয়ামের কাজা আদায় করতে হবে না।
২. অপ্রাপ্ত বয়স্ক। অপ্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তার সিয়াম পালন ফরজ নয়।
৩. পাগল। পাগল বলতে বুঝায় যার জ্ঞান-বুদ্ধি লোপ পেয়েছে। যার কারণে ভাল-মন্দের মাঝে পার্থক্য করতে পারে না। এর জন্য সিয়াম পালন ফরজ নয়। যেমন পূর্বের হাদিসে উলে¬খ করা হয়েছে। পাগল যখনই সুস্থ হয়ে যাবে তখনই সে সিয়াম পালন শুরু করে দেবে। যদি এমন হয় যে দিনের কিছু অংশ সে সুস্থ থাকে কিছু অংশ অসুস্থ তাহলে সুস্থ হওয়া মাত্রই সে পানাহার থেকে বিরত থাকবে। সিয়াম পূর্ণ করবে। পাগলামি শুরু হলেই তার সিয়াম ভঙ্গ হবে না, যদি না সে সিয়াম ভঙ্গের কোন কাজ করে।
৪.অশীতিপর বৃদ্ধ যে ভাল-মন্দের পার্থক্য করতে পারে না । এ ব্যক্তি যার বয়সের কারণে ভাল-মন্দ পার্থক্য করার অনুভূতি চলে গেছে সে শিশুর মতই। শিশু যেমন শরিয়তের নির্দেশমুক্ত তেমনি সেও। তবে অনুভূতি ফিরে আসলে সে পানাহার থেকে বিরত থাকবে। যদি তার অবস্থা এমন হয় যে কখনো অনুভূতি আসে আবার কখনো চলে যায় তবে অনুভূতি থাকাকালীন সময়ে তার উপর সালাত, সিয়াম ফরজ হবে।
৫.যে ব্যক্তি সিয়াম পালনের সামর্থ্য রাখে না। এমন সামর্থ্যহীন অক্ষম ব্যক্তি যার সিয়াম পালনের সামর্থ্য ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই। যেমন অত্যধিক বৃদ্ধ অথবা এমন রোগী যার রোগ মুক্তির সম্ভাবনা নেই—আল্লাহ্‌র কাছে আমরা এ ধরনের রোগ-ব্যাধি থেকে আশ্রয় চাই। এ ধরনের লোকদের সিয়াম পালন জরুরি নয়। কারণ সে এ কাজের সামর্থ্য রাখে না।
৬.মুসাফির। মুসাফিরের জন্য সিয়াম পালন না করা জায়েজ আছে। সফরকে যেন সিয়াম পালন না করার কৌশল হিসেবে ব্যবহার না করা হয়।
৭.যে রোগী সুস্থ হওয়ার আশা রাখে।
৮. যে নারীর মাসিক চলছে। ঋতুকালীন সময়ে নারীর জন্য সওম পালন জায়েজ নয় বরং নিষেধ।
৯. গর্ভবতী ও দুগ্ধ দানকারী নারী। যদি গর্ভবতী বা দুগ্ধ দানকারী নারী সিয়ামের কারণে তার নিজের বা সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কা করে তবে সে সিয়াম ভঙ্গ করতে পারবে। পরে নিরাপদ সময়ে সে সিয়ামের কাজা আদায় করে নিবে।
১০. যে অন্যকে বাঁচাতে যেয়ে সিয়াম ভেঙে ফেলতে বাধ্য হয়। যেমন কোন বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি ; পানিতে পড়ে যাওয়া মানুষকে অথবা আগুনে নিপতিত ব্যক্তিকে কিংবা বাড়িঘর ধসে তার মাঝে আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধার করতে যেয়ে সিয়াম ভঙ্গ করল।


Sunday, July 22, 2012

সহিহ শুদ্ধ ভাবে নামায পড়ার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় মাসলা

আমরা একাকী নামায পড়ার সময় অনেক সময় এমন কিছু ভুল করি যার জন্য আমাদের নামায একেবারেই হয় না। যেমন এক সেজদা দেয়ার পর আরেক সেজদার মাঝে সোজা হয়ে বসতে হবে, অনেক কে দেখা যায় এক সেজদা দেয়ার পর সাথে সাথে সোজা হয়ে না বসে আরেক সেজদা দিয়ে দেয়। এটা করলে সে একটা ওয়াজীব ভঙ্গ করলো তার ফলে ঐ ব্যক্তির নামায আর হবে না। অবশ্যই ২ সেজদার মাঝে এক তাসবীহ পরিমান যেমন সুবহানা রাব্বিয়াল আলা বলতে যতটুক সময় লাগে ততটুকু সময় পিঠ সোজা করে বসতে হবে। আবার রুকু করার পর সম্পূর্ণ সোজা হয়ে দাড়িয়ে সামিআল্লাহু হুলিমান হামিদাহ এরপর রাব্বানা লাকাল হামদ এটা স্পষ্ট ভাবে ঠিক সোজা হয়ে দাড়িয়ে পড়তে হবে। রুকু করার পর সম্পূর্ণ সোজা না হয়ে দাড়িয়ে সাথে সাথে সেজদায় চলে গেলে ঐ ব্যক্তি একটা ওয়াজীব তরক করলো, তার নামায হবে। এই ২ টা ভুল অনেক মুসলমান নামায পড়ার সময় প্রায়ই করে। কিন্তু নামায পড়ার সময় এই ২ টা ভুল করলে সে ওয়াজীব তরক করলো। আর কোন ওয়াজীব ভঙ্গ করলে ঐ ব্যক্তির নামায কখনো হবে না। আর ঐই সব ওয়াজীব ভঙ্গ করলে সিজদায়ে সাহু দিয়েও কোন লাভ নাই নতুন করে আবার নামায পড়তে হবে।
নামাযের মাঝে এমন অনেক সহজ সুন্নত আছে যে গুলি আমরা না জানার কারনে ছুটে যায়। যেমন রুকুতে হাতের আঙ্গুল গুলি ফাঁক রাখতে হয়, সিজদায় হাতের আঙ্গুল গুলি মিলিয়ে রাখতে হয় এবং তাশাহুদ/আত্তাহিয়্যাতু পড়ার সময় আঙ্গুল গুলি স্বাভাবিক অবস্থায় রাখতে হবে। সিজদা করার সময় প্রথমে নাক ও পরে কপাল মাটিতে রাখতে হবে। আবার সিজদা শেষ করে প্রথমে কপাল এরপর নাক উঠাতে হবে। আর নামাযে আজেবাজে চিন্তা থেকে বেচেঁ থাকার জন্য নামায শুরু করার আগে যদি আপনার কোন প্রয়োজনীয় কাজ থাকলে সেই কাজটা আগে করে তারপর জামাতে শরিক হবেন। আর নামাযে পঠিত সূরা, তসবীহ এগুলির অর্থের প্রতি লক্ষ্য রাখবেন। তাইলে আজেবাজে চিন্তা থেকে অনেকটাই বেচেঁ থাকতে পারবেন।
ধরেন জামাত শুরু হলো আপনি ১ রাকাত পর জামাতে উপস্থিত হলেন। তখন শরীয়তের ভাষায় আপনি মসবুক। ধরেন মাগরিবের ১ রাকাত পরে যদি আপনি জামাতে আসেন তাইলে ২য় রাকাতে আপনি ছানা পড়বেন না। ২য় রাকাতের বৈঠকে আপনি আত্তাহিয়্যাতু পুরাটাই পড়বেন। ৩য় রাকাতে আপনি শুধু আত্তাহিয়্যাতু পড়বেন। দোয়া মাসুরা ও দরুদ শরীফ পড়বেন না। তারপর ইমাম সাহেব উভয় সালাম ফিরানোর পর আপনি ছানা, তা-আউয ও তাসমিয়া মানে আউযুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ পড়ে সুরা ফাতেহা ও তারপর ১ টি সূরা পড়বেন। যথারিতী শেষ বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু, দুরুদ শরীফ ও দোয়া মাসুরা পড়ে নামায শেষ করবেন। আবার মাগরিবের নামাযের ২য় রাকাতে আপনি জামাতে উপস্থিত হলে আগের নিয়মে বৈঠকে আপনি আত্তাহিয়্যাতু পুরাটাই পড়বেন। পরে ঐ জামাতের ৩য় রাকাতে আপনি ইমাম সাহেবের সাথে শেষ বৈঠকে শুধু আত্তাহিয়্যাতু পড়বেন। ইমাম সাহেব উভয় সালাম ফিরানোর পর আপনি ছানা, তা-আউয ও তাসমিয়া মানে আউযুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ পড়ে সুরা ফাতেহা ও তারপর ১ টি সূরা পড়বেন। আপনার ২য় রাকাতে শুধু আত্তাহিয়্যাতু পড়বেন। ৩য় রাকাতে আপনি আবার সুরা ফাতেহা ও আরেকটি সূরা মিলিয়ে যথারিতী শেষ বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু, দুরুদ শরীফ ও দোয়া মাসুরা পড়ে নামায শেষ করবেন। এখন দেখুন মাগরিবে আপনাকে অবশ্যই ২ টি রাকাতে সূরা ফাতেহার পর অন্য একটি সূরা মিলাতে হবে। মাগরিবের নামাযের মাসলা টা বুঝলে আপনি অন্য সকল নামাযের মাসলা বুঝবেন। আর যোহরের নামায, আসরের নামায ও এশার নামাযে শেষ ২ রাকাতে শুধু সূরা ফাতেহা পড়বেন। মেয়েরা যদি কখন জামাতে অংশ গ্রহন করে তাইলে মাসবুক হিসাবেও তাদের ক্ষেত্রে একই মাসলা প্রয়োগ হবে।
আর নামায পড়ার আগে আপনাকে অবশ্যই গোসল বা ওযু করতে হবে। আপনি যদি সারা দিন গোসল করেন বা পুকুরে ডুব দেন তাও আপনার গোসল হবে না যদি না আপনি গোসলের ৩ টা ফরজ আদায় করেন। গোসলের ৩ টা ফরজ হল কুলি করা, নাকে পানি দেয়া আর সারা শরীর ভাল ভাবে ধৌত করা। আর যখন আপনি এই ৩ টা ফরজ আদায় করবেন তখন আপনাকে আর গোসলের পরে ওযু করতে হবে না। অনেক কে দেখা যায় গোসল করার পরও আবার ওযু করে। এটা ঠিক না। এটা করলে পানির অপচয় হিসাবে গন্য হবে। আর অপচয় কারী শয়তানের ভাই। আর ওযু করার সময় ওযুর ৪ টা ফরজ কাজ ক্রমানুসারে করা উচিত। যেমন প্রথমে মুখমন্ডল ধোওয়া, তার পর ২ হাতের কনুই, মাথা মাসেহ ও সর্বশেষ ২ পা ধোয়া। ওযুর মাঝে কুলি করা, নাকে পানি দেয়া ও ঘাড় মাসেহ করা সুন্নত। আর ওযু শুরু করার আগে অবশ্যই কোন শুকনা গাছের ডাল দ্বারা মেসওয়াক করবেন। মেসওয়াক করা ছেলে মেয়ে উভয়ের জন্যই প্রযোজ্য। বর্তমানে বাংলাদেশে ২০ টাকা দিয়ে যয়তুন গাছের ডাল পাওয়া যায়। ওযুর আগে মেসওয়াক করলে ঐ নামায মেসওয়াক বিহীন নামায অপেক্ষা ৭০ গুণ বেশী উত্তম হয়। দেখুন শরীয়তের এই মাসলা গুলি আমাদের সকলকেই জানতে হবে। এখন আপনি চাইলে তাবলীগে সময় লাগিয়ে বা আপনার পরিচিত কোন আলেমদের কাছ থেকে বা ফিকাহর কিতাব থেকে জেনে নিবেন। এখন মাসলা না জানার কারনে যদি আপনার ওযু, গোসল ও নামায ভুল হয় তখন কিন্তু আল্লাহ সুবহানাতায়ালা আপনাকে ক্ষমা করবে না।

Friday, July 13, 2012

এইচএসসি রেজাল্ট ২০১২ আগামী ১৮ জুলাই: জেনে নিন দরকারী সব তথ্য

সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আগামী ১৮ জুলাই বুধবার একযোগে প্রকাশিত হচ্ছে ১০ শিক্ষা বোর্ডের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফল  করবে ।
বৃহস্পতিবার আন্তঃ শিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “ওই দিন সকাল ১০টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পরীক্ষার ফল হস্তান্তর করা হবে। দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ফলাফলের সার্বিক বিষয় তুলে ধরবেন শিক্ষামন্ত্রী।”
মোট তিন পদ্ধতি তে এই ফলাফল জানা যাবে:
উপায় -১:
বরাবরের মত শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট ই রেজাল্ট এর প্রথম উত্স।
www.educationboardresults.gov.bd
উপায়-২:

এসএমএস এর মাধ্যমে

টেলিটক এই দায় দ্বায়িত্ব বহন করে। এবং এই মাধ্যমটিই বর্তমানে সবচেয়ে মোক্ষম। যে কোনও মোবাইল অপারেটর এর মধ্যমেই রেজাল্ট জানা যাবে। মোবাইল এর মেসেজ অপ্শন এ গিয়ে নিম্ন লিখিত ভাবে এসএমএস করুন।For HSC Examinees:
HSC<space>First 3 letters of your board<Space>Roll no<space>year and send to 16222.
উধাহরণ:
hsc dha 122962 2012;
এখানে  dha হল  বোর্ডের নামের প্রথম অক্ষর এবং 131185 হল রোল।  বোর্ড নাম, রোল নং এবং সালের মাঝে স্পেস দিতে ভুল করা যাবেনা।

For Alim Examinees:
Alim<space>mad<space>rollno<space>2012
For Technical Board HSC Result:
hsc<space>tech<space>rollno<space>2012
উপায়-৩:
যার যার স্কুলেই একটা করে রেজাল্ট শীট যাবে। ওখান থেকেও রেজাল্ট জানা যাবে।

Wednesday, July 11, 2012

ডায়াবেটিক রোগীর রোজা

iftar

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশসহ বিশ্বের বেশির ভাগ দেশে ডায়াবেটিসের রোগী রোজা রাখেন। ডায়াবেটিসের রোগী, যাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া রোজা রাখেন, তাঁরা বেশ কিছু জটিলতার সম্মুখীন হতে পারেন। বিশেষ করে রক্তে শর্করা বা চিনির স্বল্পতা (হাইপোগ্লাইসেমিয়া), রক্তে শর্করা বা চিনির আধিক্য (হাইপারগ্লাইসেমিয়া), ডায়াবেটিস কিটোএসিডোসিস ও পানিশূন্যতায় ভুগতে পারেন। যাঁরা শুধু খাবার ও ব্যায়ামের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখেন, তাঁদের রোজা রাখায় ঝুঁকি কম। যাঁরা মেটাফরমিন ও গ্লিটাজোনস-জাতীয় ওষুধ গ্রহণ করেন, তাঁদেরও ঝুঁকি কম।
তবে যাঁরা সালফোনাইলইউরিয়া ও ইনসুলিন গ্রহণ করেন, তাঁদের ঝুঁকি বেশি। যাঁদের সামর্থ্য আছে, তাঁদের রোজা রাখতে ডায়াবেটিস কোনো বাধা নয়। তবে প্রয়োজন পূর্বপ্রস্তুতি। চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে রোজা রাখার প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন। ডায়াবেটিসের রোগীদের রোজা রাখা সহজ ও নিরাপদ। রোজা রাখা অবস্থায় রক্ত পরীক্ষা করা এবং প্রয়োজন হলে চামড়ার নিচে ইনসুলিন ইনজেকশন নেওয়া যেতে পারে। ধর্মবিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে আমরা জেনেছি, এতে রোজার কোনো ক্ষতি হয় না। সুতরাং এসব নিয়ম মেনে ডায়াবেটিসের রোগীরা রোজা রাখতে পারবেন।
রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যাওয়া (হাইপোগ্লাইসেমিয়া)
দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার কারণে দিনের শেষ ভাগে স্বাস্থ্যের দিকে বেশি নজর দিতে হবে। অতিরিক্ত কাজ করায় রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যেতে পারে। বড় ধরনের শারীরিক বা কায়িক পরিশ্রম রক্তের গ্লুকোজের বড় একটা অংশ কমিয়ে দেয়। অতিরিক্ত ইনসুলিন অথবা ট্যাবলেট গ্রহণ করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। ইনসুলিন ও সিরিঞ্জ একই মাপের না হলে, বরাদ্দের চেয়ে খাবার খুব কম খেলে বা খাবার খেতে ভুলে গেলে এ অবস্থা হতে পারে।
হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ
অসুস্থ বোধ করা। বুক ধড়ফড় করা। শরীর কাঁপতে থাকা। চোখে ঝাপসা দেখা। অজ্ঞান হয়ে যাওয়া। খিদে বেশি পাওয়া। বেশি ঘাম হওয়া। শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা। অস্বাভাবিক আচরণ করা। খিঁচুনি হওয়া।
হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে কী করতে হবে
রোজাদার ডায়াবেটিসের রোগীর এসব লক্ষণ দেখা দিলে অথবা রক্তে সুগারের পরিমাণ ৬০ মিলিগ্রামের (৩.৬ মিলিমোল) নিচে হলে রোজা ভেঙে ফেলতে হবে। পরবর্তী সময়ে কাজা রোজা রাখতে হবে। হাইপোগ্লাইসেমিয়া একটি জরুরি অবস্থা। এ রকম হলে রোগীকে সঙ্গে সঙ্গে চা-চামচের চার থেকে ছয় চামচ গ্লুকোজ বা চিনি এক গ্লাস পানিতে গুলে খাওয়াতে হবে। গ্লুকোজ বা চিনি না থাকলে যেকোনো খাবার সঙ্গে সঙ্গে দিতে হবে। রোগী অজ্ঞান হয়ে গেলে মুখে কিছু খাওয়ানোর চেষ্টা না করে গ্লুকোজ ইনজেকশন দিতে হবে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
হাইপোগ্লাইসেমিয়া এড়ানোর উপায়
এমন খাবার ও ওষুধ খেতে হবে, যা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রাকে স্বাভাবিক পর্যায়ে রাখবে। খাবার ও ওষুধ খাওয়ায় সমন্বয় সাধন করতে হবে। নিচের নিয়মগুলো মেনে চললে হাইপোগ্লাইসেমিয়া এড়ানো সম্ভব। কঠিন শারীরিক বা কায়িক পরিশ্রমের কাজ বাদ দিতে হবে। কেননা, এটি কোনো রকম আভাস ছাড়াই রক্তে গ্লুকোজের মাত্রাকে অত্যন্ত নিম্নমুখী করে দেয়। দেরিতে ইফতার করায়ও এমন অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। বারবার ওষুধের মাত্রার হিসাব সংরক্ষণ করতে হবে, সেটি ইনসুলিন হোক কিংবা ট্যাবলেট। একইভাবে খাবারের পরিমাণেরও হিসাব রাখতে হবে, বিশেষ করে শর্করার পরিমাণ।
এরপর এই হিসাব বিশেষজ্ঞচিকিৎসককে জানাতে হবে, যেন খাবারের মাধ্যমে রক্তে গ্লুকোজের প্রভাব উচ্চমাত্রা এবং ওষুধের সাহায্যে রক্তে গ্লুকোজের প্রভাব নিম্নমাত্রা—এই দুইয়ের সমতা রক্ষা হয়।
গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যাওয়া (হাইপারগ্লাইসেমিয়া)
ডায়াবেটিস রোগে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে গেলে অনেক রকম জটিলতা সৃষ্টি হয়। ইনসুলিনের ঘাটতির কারণে কম সময়ে অ্যাসিটোন বেড়ে অবস্থা জটিল হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে প্রধান যে অবস্থাগুলো প্রকাশ পায় সেগুলো হলো—মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, কখনো কখনো ঝিমুনি, বমি প্রভৃতি।
এ ছাড়া রক্তে গ্লুকোজের কার্যক্রম অনিয়মতান্ত্রিক হয়ে পড়ায় অতিরিক্ত প্রস্রাব, পিপাসা ও পানিশূন্যতা দেখা যায়। এ সময় রক্তচাপ নিম্নমুখী হয়, ত্বক শুকিয়ে যায়, প্রস্রাবে গ্লুকোজ বেশি মাত্রায় প্রকাশ পায় এবং সেই সঙ্গে প্রস্রাবে অ্যাসিটোন দেখা যায়। এ অবস্থায় যদি দ্রুত চিকিৎসা করানো না হয়, তাহলে কিটোএসিডোসিস হবে এবং রোগী বিপজ্জনক অবস্থায় পৌঁছাবে।
রোজা থাকা অবস্থায় এ রকম হলে রোজা ভেঙে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। কিটোএসিডোসিস ছাড়াও যদি রক্তের সুগার বিপজ্জনক অবস্থায় পৌঁছায় (১৬.৭ মিলিমোল/লি. বা ৩০০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার), তাহলে ত্বকের নিচে ইনসুলিন দিয়ে সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এতে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। পরবর্তী সময়ে শুধু ডায়াবেটিসের ওষুধ সমন্বয় করতে হবে।
রোজাদার ডায়াবেটিক রোগীর খাবার
 সেহিরর খাবার সেহিরর শেষ সময়ের অল্প কিছুক্ষণ আগে খাওয়া।
 ইফতারের সময় অধিক পরিমাণে মিষ্টি ও চর্বিজাতীয় খাবার গ্রহণ না করা।
 ডায়াবেটিসের রোগীদের পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে, যেন তাঁরা পানিশূন্যতায় না ভোগেন। খেজুর খেলে একটা খেজুর খেতে পারেন। ফলমূল, শাকসবজি, ডাল ও টক দই তালিকাভুক্ত করতে পারেন। ডাবের পানি পান করতে পারেন। যদি কোনো পানীয় পান করেন তবে চিনিমুক্ত পানি বেছে নিতে পারেন। যদি মিষ্টি পানীয় পছন্দ করেন, তবে সুইটনার যেমন—ক্যানডেরাল বা সুইটেকস ব্যবহার করতে পারেন। ভাজা খাবার যেমন—পিঁয়াজু, বেগুনি, পুরি, পরোটা, কাবাব অল্প পরিমাণে খেতে পারেন।
 খাদ্যের ক্যালরি ঠিক রেখে খাওয়ার পরিমাণ এবং ধরন ঠিক করতে হবে। সঠিক সময়ে সঠিক পরিমাণ পাওয়া প্রয়োজন।
 রমজানের আগে যে পরিমাণ ক্যালরিযুক্ত খাবার খেতেন রমজানে ক্যালরির পরিমাণ ঠিক রেখে খাওয়ার সময় এবং ধরন বদলাতে হবে। পরবর্তী পাতায় কিছু নমুনা খাবার দেওয়া হলো। প্রয়োজন হলে নিউট্রিশনিস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করে খাবারের তালিকা ঠিক করে নিতে হবে। লক্ষ রাখতে হবে ওষুধের সঙ্গে খাবারের যেন সামঞ্জস্য থাকে। ইফতারের সময় অতি ভোজন এবং শেষ রাতে অল্প আহার পরিহার করতে হবে।
রোজায় ডায়াবেটিক রোগীর ব্যায়াম
 দিনের বেলায় অধিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করা উচিত নয়। ইফতার বা রাতের খাবারের এক ঘণ্টা পর ব্যায়াম করা যেতে পারে। মনে রাখতে হবে, তারাবির নামাজেও কিছুটা ব্যায়াম হয়ে যায়।
রোজায় ডায়াবেটিক রোগীর ওষুধ
 যাঁরা দিনে একবার ডায়াবেটিসের ওষুধ খান, তাঁরা ইফতারের শুরুতে (রোজা ভাঙার সময়) ওই ওষুধ একটু কম করে খেতে পারেন।
 যাঁরা দিনে একাধিকবার ডায়াবেটিসের ওষুধ খান, তাঁরা সকালের মাত্রাটি ইফতারের শুরুতে এবং রাতের মাত্রাটি অর্ধেক পরিমাণে সেহিরর আধা ঘণ্টা আগে খেতে পারেন।
 যেসব রোগী ইনসুলিন নেন, তাঁদের রমজানের আগেই ইনসুলিনের ধরন ও মাত্রা ঠিক করে নেওয়া উচিত। সাধারণত রমজানে দীর্ঘমেয়াদি ইনসুলিন ইফতারের সময় বেশি এবং প্রয়োজনে শেষ রাতে অল্প মাত্রায় দেওয়া উচিত। দীর্ঘমেয়াদি এবং কম ঝুঁকিপূর্ণ ইনসুলিন (যা দিনে একবার নিতে হয়) বর্তমানে আমাদের দেশে পাওয়া যায়, তা ব্যবহার করতে পারেন। এতে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার সম্ভাবনা অনেকটা কম।
 রমজানের কমপক্ষে তিন মাস আগে ডায়াবেটিসের রোগীর অবস্থা অনুসারে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে মুখে খাওয়ার ওষুধ এবং ইনসুলিন ঠিক করা উচিত।
রমজানের প্রথম ও শেষ দিনে ওষুধকে বিশেষ করে সমন্বয় করে নিতে হবে। এই দুদিন খাবার এবং জীবনযাত্রায় বিশেষ পরিবর্তন হয়ে থাকে।

Friday, July 6, 2012

+৯২, #৯০, #০৯ নং দিয়ে শুরু হওয়া কল থেকে সাবধান!!!!


মোবাইল ফোনের সিম ক্লোনের আতঙ্ক ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে। +৯২, #৯০ এবং #০৯ এ তিনটি প্রাইমারি কোডের কোনো কল ধরার সঙ্গে সঙ্গে আপনার মোবাইল সিমের সব ধরনের তথ্য কপি হয়ে যাচ্ছে।
সংবাদমাধ্যম সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
এ নতুন ধরনের আতঙ্ক নিয়ে মোবাইল অপারেটররা পড়েছেন দারুণ বিপাকে। এ ধরনের ফোন কোড থেকে কল আসা মানেই কলার কল রিসিভারের তথ্য ক্লোন করতে চাইছে। অর্থাৎ
বুঝতে হবে কলার আপনার  সেলফোনের তথ্য কপি করছে।
এ ধরনের তথ্য অন্যের হাতে চলে গেলে অনেক ক্ষেত্রেই বড় ধরনের আর্থিক বিপর্যয়ের সুযোগ থাকে। আর সামাজিক মর্যাদা বা ব্লাকমেইলিংয়ের খপ্পড়ে পড়ার বিষয় তো থাকছেই।
কারণ সেলফোনে আজকাল অনেক ব্যক্তিগত তথ্য, ছবি বা কোড সংরক্ষণে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি
এদিকে সেলফোনে কল করার মাধ্যমে অন্যের অন্য সেল  থেকে তথ্য ছিনতাইয়ের এ কৌশলটি দারুণ ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞেরা। এরই মধ্যে ভারতের লক্ষাধিক মোবাইল গ্রাহক এ সিম ক্নোন সমস্যায় পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অনেকে সিমের তথ্য ব্যাংকে এটিএম, ভিসা বা মাস্টার কাডের্র গোপন পিন নম্বর, ব্যাংক আকাউন্ট নম্বর ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের পাসওয়ার্ড সংরক্ষণ করেন। ফলে এসব তথ্য অন্যের হাতে চলে যাওয়া মানে ব্যক্তি, সামাজিক এমনকি প্রতিষ্ঠানিক বা করপোরেট জগতে বড় ধরনের বিপর্যয় হতে পারে।
তাই শঙ্কা ছাড়িয়ে বিষয়টি ক্রমশ আতঙ্কে রূপ নিচ্ছে। ঠিক কি কারণে এবং কিভাবে এ ভয়াবহ কৌশলটি অপারেশন করছে তা ধরতে পারলে এ ধরনের ডাটা হ্যাকিং নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
নিরাপত্তা সংস্থাগুলোও এ বিষয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান চালাচ্ছে। আপাতত এ ধরনের অপরিচিত কোডের কল না ধরার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষজ্ঞেরা। শুধু কল ধরা নয়, এ ধরনের নম্বর
থেকে মিস কল আসলেও কল ব্যাক করা থেকে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে।
এ সমস্যারস্থায়ী সমাধান না পাওয়া পর্যন্ত সেলফোন গ্রাহকদের অপরিচিত কল রিসিভ ও মিসড কলব্যাক না করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কল এলে নম্বরটি ভাল করে দেখে নিন, তা +৯২, #৯০, #০৯ নম্বর দিয়ে শুরু
কি না! এ সিম ক্লোন প্রসঙ্গে ভারতের লখনৌর
আইটি বিশেষজ্ঞ পুনিত মিসরা জানান, শুধু তথ্য নয়, সিমের মধ্যে সংরক্ষিত সব ধরনের তথ্য যেমন ছবি, ভিডিওক্লিপস, এমএমএস নিমিষেই কপি করে ফেলছে এ ইউনিক কোড। এদিকে আরেক নেটওয়ার্ক বিশেষজ্ঞ রাকশিত ট্যান্ডন জানান, এ ধরনের অপরিচিত এবং সাংকেতিক ফোন কল থেকে বিরত থাকাই সুরক্ষার অন্যতম কৌশল। অচিরেই এটি নিয়ন্ত্রণে কারিগরি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর মোবাইল গ্রাহকদের এসব অানকোড নম্বর থেকে ফোন কল ধরতে নিষেধ করা হচ্ছে। কেননা এরই মধ্যে আক্রমণকারীরা নতুন কিছু কোড দিয়ে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে পারে।কাজেই এ বিষয়ে সচেতনতাই মূল প্রতিরোধ হিসেবে কাজ করছে।