পালং
শাক সারা পৃথিবীতেই অত্যন্ত সুপরিচিত একটি শাক। পালং শাক মূলত মধ্য
দণি-পশ্চিম এশিয়ার একটি সবজি। পালং শাক একটি বর্ষজীবী উদ্ভিদ, যা সাধারণত
এক ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। বর্ষার শেষে পালং শাকের চাষ করা হয় এবং
শীতকালে শাক হিসেবে সংগ্রহ করা হয়। পালং শাকের পাতা সবুজ এবং পাতার উপরের
অংশ চওড়া।
জৈব রাসায়নিক উপাদান
পালং
শাক অত্যন্ত পুষ্টিমানসমৃদ্ধ একটি শাক। প্রতি ১০০ গ্রাম পালং শাকে আছে ২৩
কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি, কার্বোহাইট্রেড ৩.৬ গ্রাম, আঁশ ৪.২ গ্রাম, চিনি
০.৪ গ্রাম, প্রোটিন ২.২ গ্রাম, ভিটামিন এ ৪৬৯ মাইক্রোগ্রাম-৯৪০০১৪ ইউনিট,
বিটাকেরোটিন, ৫৬২৬ মাইক্রোগ্রাম লিউটিন, জাঞ্ছিন ১২.১৯ মি. গ্রাম, ফোলেট
(বি৯) ১৯৬ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন সি ২৮ মি. গ্রাম, ভিটামিন কে ৪৬৩
মাইক্রোগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৯৯ মি. গ্রাম, আয়রন ২.৭ মি. গ্রাম।
কার্যকারিতা
এন্টি
অক্সিডেন্ট হিসেবে : পালং শাকে প্রচুর ফাভোনয়েড নামক এন্টি অক্সিডেন্ট
থাকায় তা শরীরের অক্সিডেশন প্রক্রিয়া দূর করতে সাহায্য করে।
এন্টি
ক্যান্সার : পালং শাকে ১৩ প্রকার ফাভোনয়েডস আছে, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে
খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটা প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে
খুবই কার্যকর।
হৃদরোগ
প্রতিরোধে : পালং শাকে প্রচুর ভিটামিন সি ও ভিটামিন এ বিদ্যমান। এ ছাড়া
এতে বিভিন্ন ধরনের এন্টি অক্সিডেন্ট বিদ্যমান, যা ফ্রি রেডিকেলের পরিমাণ
কমায় এবং কোলেস্টেরল লেভেল কমায়। এতে প্রচুর ভিটামিন বি১ থাকায়
হৃৎপিণ্ডের শক্তি বর্ধক হিসেবে কাজ করে।
গ্যাসট্রোইন্টেস্টাইনাল অ্যাকটিভিটি : পালং শাকে প্রচুর ভিটামিন সি এবং বিটা কেরোটিন থাকায় তা কোলেনের কোষগুলোকে রক্ষা করে।
প্রদাহনাশক হিসেবে : বাত ব্যথা, অস্টিওপোরোসিস, মাইগ্রেশন, মাথাব্যথা দূর করতে প্রদাহনাশক হিসেবে পালং শাক কাজ করে।
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে : পালং শাক স্মৃতিশক্তি বর্ধক হিসেবে এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে খুবই কার্যকর।
চুরোগ দূর করতে : পালং শাকে প্রচুর ভিটামিন এ লিউটিন থাকায় নিয়মিত পালং শাক খেলে রাতকানা রোগ ও চোখে ছানি পড়া প্রতিরোধ করে।
রক্তস্বল্পতা দূর করতে : পালং শাকে প্রচুর আয়রন ও ভিটামিন সি থাকায় রক্তস্বল্পতা দূর করতে খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
মাসিকজনিত ব্যথা : পালং শাকে প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেলস থাকায় এটি মাসিকজনিত সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে : পালং শাকে প্রচুর ভিটামিন সি থাকায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
গর্ভবতী
ও স্তন্যদানকারী মায়েদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় : প্রচুর ভিটামিন ও
মিনারেলস থাকায় এটি গর্ভবতী মহিলাদের রক্তস্বল্পতা দূর করে এবং
স্তন্যদানকারী মহিলাদের স্তন্য দুগ্ধ বাড়াতে সহায়তা করে।
গ্যাস্ট্রিকের
সমস্যা দূর করে : পালং শাকে বিভিন্ন প্রকার ক্ষারীয় উপাদান থাকায় এটা
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
দাঁত
ও হাড়ের ক্ষয় রোধে : পালং শাকে প্রচুর ক্যালসিয়াম, আয়রন ও ভিটামিন সি
থাকায় দাঁত ও হাড়ের ক্ষয়রোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
প্রস্তাবের সমস্যা দূর করতে : পালং শাক মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে এবং কিডনির প্রদাহ দূর করে।
শ্বাসনালীর সমস্যায় : ব্রঙ্কোডায়ালেটর হিসেবে কাজ করে, ফলে ব্রঙ্কাইটিস ও অ্যাজমা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
No comments:
Post a Comment