১. তাৎক্ষণিকতা
যে
কোনো ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই রেডিও টিভির মতো এতে প্রকাশ করা যায়। আবার
মেইলে খবরের আপডেট পাঠানোরও সুবিধা আছে। গুগল ফিডবার্নারসহ বিভিন্নভাবে এটা
করা সম্ভব।
২. স্থায়িত্ব
অনলাইনে প্রকাশিত রিপোর্টের স্থায়িত্ব অনেক
বেশি। প্রকাশিত রিপোর্টগুলো আর্কাইভ করে রাখার ব্যবস্থা থাকায় তা যে কোনো
সময় দেখা যায়। অন্য যে কোনো মিডিয়ার (প্রিন্ট, রেডিও ও টিভি) চেয়ে এটা
খুঁজে বের করা অনেক সহজ।
৩. উপভোগ্য
অনলাইন সংবাদপত্রে লেখার পাশাপাশি গ্রাফিক্স, অডিও, গান, ভিডিও ফুটেজ ও অ্যানিমেশন সংযুক্ত করা সম্ভব। ফলে এটা উপভোগ্য হয়ে ওঠে।
৪. ইন্টার-অ্যাকটিভ (interactive)
অনলাইন
সাংবাদিকতা একটি ইন্টার-অ্যাকটিভ প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে পাঠকের মতামত
জানা ও পাঠককে নিজের মতামত দ্বারা প্রভাবিত করার সুযোগ বিদ্যমান। এখানে
একটি লেখার সঙ্গে একই বিষয়ের অন্যান্য লিংক প্রদান করা যায়। ফলে পাঠক খুব
সহজেই একই বিষয়ে অন্যান্য লেখা সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করতে পারে। তাছাড়া এতে
লেখার সূত্র উল্লেখ করা যায় বিধায় পাঠক রিপোর্টের বা লেখার বস্তনিষ্ঠতা
সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারে।
৫. পূর্ণাঙ্গ, সমৃদ্ধ ও সর্বশেষ সংবাদ পরিবেশনা
অনলাইন
সংবাদপত্রে জায়গার কোনো সমস্যা নেই। কিংবা রেডিও টিভির মতো সময়েরও
সীমাবদ্ধতা নেই। ফলে একজন অনলাইন সাংবাদিক তার স্টোরিকে বিভিন্ন তথ্যে
সমৃদ্ধ করে প্রকাশ করতে পারেন। আবার প্রিন্ট মিডিয়ায় একবার প্রকাশিত হয়ে
গেলে তা আর সংশোধন করার সুযোগ থাকে না। কিন্তু অনলাইনে এ ধরনের সমস্যা নেই।
এ জগতের সাংবাদিকরা ঘটনা ঘটার সঙ্গেই তা আপডেট করে দিতে পারেন।
প্রিন্ট মিডিয়ায় সাংবাদিকতার ওপর ইন্টারনেটের প্রভাব
প্রিন্ট
মিডিয়ার কর্মী, সাংবাদিক ও সম্পাদকদের কাছে ইন্টারনেট বর্তমানে সময়
বাঁচানো গবেষণাসম্পদ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। বিশেষ করে কোনো বিষয়ের
ব্যাকগ্রাউন্ড জানার ক্ষেত্রে এটি বিশেষ ভূমিকা রাখছে। ইন্টারনেটে প্রিন্ট ও
সম্প্রচার মিডিয়ার বিভিন্ন প্রবন্ধ-নিবন্ধ, কলাম, ধারাবাহিক ফিচার পাওয়া
যায়, যা জ্ঞানার্জনে অনেক সহায়ক হচ্ছে।
কিভাবে শুরু করবেন অনলাইন সাংবাদিকতা?
প্রথম স্তর
১.
প্রথমেই আপনাকে সাংবাদিকতার প্রাথমিক ধারণা নিতে হবে। কীভাবে সংবাদ লিখতে
হয়, সংবাদের উপাদানগুলোই বা কী ইত্যাদি। সেটা আপনি বই পড়ে জানতে পারেন।
তাছাড়া এখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে কোর্সের আয়োজন করছে। সেখানেও অনেক
কিছু জানার আছে।
২. আপনাকে অবশ্যই কম্পিউটার চালানো শিখতে হবে। এমএস
ওয়ার্ডে বাংলা ও ইংরেজি লিখতে জানতে হবে। তাছাড়া ফটোশপ ও ইলাস্ট্রেটর
সম্পর্কে ধারণা থাকলে ভালো।
৩. ইন্টারনেট সম্পর্কে ধারণা অর্জন করতে
হবে। এক্ষেত্রে কিছু ওয়েব ব্যাসিক এবং প্রোগ্রামিং ভাষা শেখা থাকলে ভালো।
তবে প্রোগ্রামিং ভাষা খুব বেশি দরকার নেই। যাদের বিভিন্ন ব্লগে লেখার
অভ্যাস আছে তারা এক্ষেত্রে সামান্য হলেও এগিয়ে আছেন।
৪. লেখার দক্ষতা
বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। এক্ষেত্রে কার্যকর উপায় হচ্ছে বিভিন্ন বিষয়ে বেশি
বেশি লেখা এবং ভালো কোন লেখক বা সম্পাদকের দ্বারা সম্পাদনা করিয়ে নিজের
ভুলগুলো চিহ্নিত করা।
২য় স্তর
১. প্রথমে আপনার লেখার (ফিচার, নিউজ, সাক্ষাৎকার ইত্যাদি) বিষয় নির্ধারণ করুন।
২.
আপনার বাছাই করা বিষয়ে কিছু নমুনা লেখা লিখে ফেলুন। এক্ষেত্রে নিজের কোন
ওয়েবসাইট থাকলে তাতে লেখাগুলো প্রকাশ করুন। নিজের ওয়েবসাইট না থাকলে হতাশার
কিছু নেই। বর্তমানে অনেক ফ্রি ওয়েবসাইট (বিভিন্ন ব্লগ, ওয়ার্ডপ্রেস.কম
ইত্যাদি) পাওয়া যাবে যেখানে আপনি চাইলেই লিখতে পাবেন।
৩. এবার ফ্রিল্যান্সারদের লেখার দায়িত্বে আছেন এমন দুয়েকজন সম্পাদক/সহ-সম্পাদক খুঁজে বের করুন।
৪.
তাদেরকে আপনার পরিচয় প্রদান করে আপনি যে লিখতে ইচ্ছুক তা জানিয়ে চিঠি/মেইল
করুন। তাদের কাছে অ্যাসাইনমেন্ট চাইতে পারেন। তবে অবশ্যই তাদের কাছে আপনার
লেখার দুয়েকটি নমুনা কপি পাঠাবেন। তাছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে লেখার আইডিয়া নিয়ে
সংশ্লিষ্ট সম্পাদকের সঙ্গে ফোনে বা মেইলে আলোচনা করতে পারেন।
৫. এসব
কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আপনার যোগাযোগ বাড়ান এবং আপনাকে লেখার
সুযোগ দিতে অনুরোধ করুন। একই সময়ে আপনার ব্লগ কিংবা সাইটে নিয়মিত লিখতে
থাকুন।
উল্লিখিত উপায়ে কাজ করলে অবশ্যই আপনি লেখার সুযোগ পাবেন, একথা বলা যায় নির্দ্বিধায়।
তৃতীয় স্তর
এবার
বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় আপনার সিভি পাঠান। সাথে সাথে হাউসগুলোতে আপনার
যোগাযোগ অব্যাহত রেখে নিয়মিত সাংবাদিক হিসেবে নিয়োগ পেতে চেষ্টা করুন।
অনলাইন সাংবাদিকতা : নৈতিকতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা
অনলাইন
সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে প্রত্যেক সংবাদকর্মীকে অবশ্যই দৃঢ় নৈতিকতাবোধ
সম্পন্ন হওয়া উচিত। কারণ অনলাইন বর্তমানে একটি গবেষণা সম্পদ হিসেবে কাজ
করছে। ফলে মিথ্যা ও বিকৃত তথ্য দিয়ে কোনো লেখা দিলে তা ইতিহাস বিকৃতির চরম
পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে। এছাড়া একজন পাঠক একই সময়ে অনেকগুলো সংবাদপত্র পড়তে
পারে। ফলে সঠিক তথ্য প্রদান না করলে সংশ্লিষ্ট সংবাদপত্র বিশ্বাসযোগ্যতা
হারাবে এবং আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
No comments:
Post a Comment