ফেসবুকইং সময় একটু আগে আমার সামনে লেখটা চলে আসে!! পড়ার পর আমি পুরাই অবাক হয়ে গিয়েছি। 
আর যেহেতু এটা বাচ্চাদের বিষয় এবং মূল লেখকের অনুমতি ও রয়েছে অন্য কোথাও প্রকাশ করার তাই পোষ্ট না 
করে পারলাম নাহ। কারণ আমাদের এই পেজেও রয়েছে প্রতিদিন অসংখ্য ভিজিটর। যাদের মধ্যে রয়েছে
 অনেক শিশুর বাবা-মা, ভাই-বোন! তাই তাদের জানানোর জন্যই টিপির “হেলথ কেয়ার” বিভাগে পোষ্ট টি দিলাম। 

 সকাল
 বেলা উঠেই পেপার পড়ার অভ্যেস আর তার সাথে চা না হলে তো পেপার পড়া জমেই 
না। পেপার উল্টোতেই আমার চোখ কপাল উপরে উঠল, কাশতে কাশতে চা আমার সারা 
শরীরে পড়ে গেল। মা আমাকে নোটিশ করে বলল
“ ভূত দেখেছ নাকি পেপারে”
আমি বললাম, “মা এটা তো ভূতের বাপ, ইহা সবাই দেখে, এই ভূত এখন মানুষ হয়ে গেছে, কেউ বোঝে, কেউ বোঝে না, আবার কেউ বুঝে এই ভূতকে মানুষের মত মানুষ বানানোর চেষ্টা করে”
যা হোক এবার মূল প্রসঙ্গে আসা যাক,
একটি বহুল প্রচলিত দৈনিক পত্রিকার এক পৃষ্ঠা জুড়ে একটি অ্যাড।
“২ গ্লাস হরলিক্স = ৬৬৬ গ্রাম ইলিশ মাছের সমান আয়রন”
“বেড়ে ওঠার ডোজ
রোজ রোজ”
“হরলিক্স তো রেগুলার খাবার কেন আপনি দিচ্ছেন না”
হতভম্ব হয়ে কিছুক্ষন চিন্তা করলাম, আচ্ছা এ ধরনের অ্যাড কি হরলিক্স আবিস্কারের দেশ ব্রিটেনে দেওয়া হয়।যা হওক এই বিষয়ে 
আলোচনা একটু পরে করব।আগে মূল বিষয়টা যানা প্রয়োজন।
আপনি যদি রেগলার প্রিন্ট মিডিয়া অথবা ইলেক্ট্রিক মিডিয়ার অ্যাডগুলো দেখে থাকেন তাহলে দেখবেন আপনি যাই খাবেন অথবা 
তার মধ্যেই ভিটামিন অথবা মিনারেল রয়েছে অথবা দুটো এক সঙ্গেই আছে। অ্যাডগুলো দেখে আপনার মনে হতে পারে ভিটামিন এবং
 মিনারেল খুবি দুর্লভ বস্তু এবং আপনাকে ভিটামিন এবং মিনারেল বিশাল পরিমানে ফুড সাপ্লিমেন্ট (খাবারের সম্পূরক)আকারে নিতে হবে।
চলুন ভিটামিন এবং মিনারেল সম্পর্কে কিছুটা জানা যাক।l
ভিটামিন
ভিটামিন
 হচ্ছে জৈবিক পদার্থ যা মানুষের জন্য খুব কম পরিমানে প্রয়োজন হয় শরীরের 
নির্দিষ্ট কিছু কোষীর কাজ সম্পাদনের জন্য। মানুষের দেহ ভিটামিন তৈরী করতে 
পারে না, সুসাস্থের জন্য ভিটামিনগুলোকে আমাদের প্রতিদিনের খাবারের সাথে 
নিতে হয়।
মিনারেল
মিনারেল
 হচ্ছে অজৈবিক যা মানুষের দেহের গঠনমূলক পদার্থ, এটি এনজাইম এর বিশ্লেষনে 
সহকারি হিসেবে কাজ করে, স্নায়ুর সঞ্ছালনে সাহায্য করে, অম্ল এবং ক্ষারকের 
সাম্যবস্থা রক্ষা করে । মানুষের দেহ মিনারেল তৈরী করতে পারে না, প্রত্যেকটি
 মিনারেল প্রতিদিন খাবারের সাথে একটি নির্দিষ্ট পরিমানে নিতে হয়।
FDA(Food & Drug Administration-America) নির্দেশনা
“There
 are many good reasons to consider taking vitamin supplements, such as 
over-the-counter multivitamins. According to the American Academy of 
Family Physicians (AAFP), a doctor may recommend that you take them:
-  for certain health problems
 
-  if you eat a vegetarian or vegan diet
 
-  if you are pregnant or breastfeeding
 
supplements
 may be useful when they fill a specific identified nutrient gap that 
cannot or is not otherwise being met by individual’s intake of food.”
অর্থাৎ,
 ভিটামিগুলো সাপ্লিমেন্ট আকারে উপরে উল্লেখিত কন্ডিশনে উপকারি হতে পারে 
কিন্তু এর উপকারিতা প্রমানিত নয়। আর নরমাল কন্ডিশনে তো নেয়ার প্রশ্নই আসে
 না।
আরো ভয়ংকর তথ্য আছেঃ
“As
 is the case with all dietary supplements, the decision to use 
supplemental vitamins should not be taken lightly, says Vasilios 
Frankos, Ph.D., Director of FDA’s Division of Dietary Supplement 
Programs”.
যদি ভিটামিগুলো প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেওয়া তাহলে এটা প্রমানিত যে আপনার নিম্ন বর্নিত সমস্যাগুলো হতে পারেঃ
Fat-soluble Vitamins
-  A
 (retinol, retinal, retinoic acid): Nausea, vomiting, headache, 
dizziness, blurred vision, clumsiness, birth defects, liver problems, 
possible risk of osteoporosis. You may be at greater risk of these 
effects if you drink high amounts of alcohol or you have liver problems,
 high cholesterol levels or don’t get enough protein.
 
-  D 
(calciferol): Nausea, vomiting, poor appetite, constipation, weakness, 
weight loss, confusion, heart rhythm problems, deposits of calcium and 
phosphate in soft tissues. If you take blood thinners, talk to your 
doctor before taking vitamin E or vitamin K pills.
 
(একটি
 (retinol, রেটিনা, retinoic অ্যাসিড): বিবমিষা, বমি, মাথা ব্যাথা, মাথা 
ঘোরা, ঝাপসা দৃষ্টি, জবরজঙ্গতা, জন্ম ত্রুটি, লিভার সমস্যা, অস্টিওপরোসিস 
সম্ভাব্য ঝুঁকি. আপনি এই প্রভাব বেশী ঝুঁকি যদি আপনি এলকোহল উচ্চ পরিমাণে 
পান অথবা আপনি যকৃতের সমস্যা, কলেস্টেরলের মাত্রা আছে বা কি যথেষ্ট প্রোটিন
 পেতে নাও হতে পারে.  ডি (calciferol): বিবমিষা, বমি, দরিদ্র ক্ষুধা, 
কোষ্ঠবদ্ধতা, দুর্বলতা, ওজন হ্রাস, ধন্দ, হার্ট তাল সমস্যা, ক্যালসিয়াম 
আমানতের এবং নরম টিস্যু মধ্যে ফসফেট. যদি আপনি রক্ত thinners লাগবে আপনার 
ডাক্তার থেকে, ভিটামিন ই বা ভিটামিন বড়ি গ্রহণ আগে কথা বলা.)
Water-soluble Vitamins
• B-3 (niacin): flushing, redness of the skin, upset stomach.
• B-6 (pyridoxine, pyridoxal, and pyridoxamine): Nerve damage to the limbs, which may cause numbness, trouble walking, and pain.
• C (ascorbic acid): Upset stomach, kidney stones, increased iron absorption.
•
 Folic Acid (folate): High levels may, especially in older adults, hide 
signs of B-12 deficiency, a condition that can cause nerve damage.
জল দ্রাব্য ভিটামিন
(•
 B-3 (niacin): flushing চামড়া, পেট খারাপ এর লালভাব. • B-6 (pyridoxine, 
pyridoxal, এবং pyridoxamine): চেহারা, যা অসাড়তা, কষ্ট হাঁটা, এবং ব্যথা 
হতে পারে স্নায়ু ক্ষতি. • সি (অ্যাসকরবিক অ্যাসিডের ন্যায়): পেট, 
মূত্রগ্রন্থি পাথর, লোহা বিশোষণ বৃদ্ধি করে. • সবুজ শাকসজীতে প্রাপ্ত 
অ্যাসিড (folate): উচ্চ মাত্রায় বিশেষত পুরোনো প্রাপ্তবয়স্কদের, A, B-12 
অভাব, একটা শর্তে যে স্নায়ু ক্ষতি হতে পারে লক্ষণ আড়াল হতে পারে)
আপনার যকৃৎ নষ্ট হয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে, প্যারালাইজড, হার্ট এর সমস্যা হতে পারে।
হরলিক্স কি?
বাংলাদেশে যে হরলিক্সটি পাওয়া যায় সেটি হচ্ছে ফুড ফরটিফাইড। পাওডার দুধ, গম এবং বার্লির সংমিশ্রনে তৈরী হরলিক্সে বাহির থেকে ভিটামিন এবং মিনারেল অ্যাড করা হয়েছে ফুড সাপ্লিমেন্ট হিসেবে। হরলিক্স প্রস্তুকারি কোম্পানি হচ্ছে GlaxoSmithKline(GSK)।
“২ গ্লাস হরলিক্স = ৬৬৬ গ্রাম ইলিশ মাছের সমান আয়রন”
“বেড়ে ওঠার ডোজ
রোজ রোজ”
“হরলিক্স তো রেগুলার খাবার”
যেই
 ভিটামিন এবং মিনারেলগুলো উপকারি কিনা নিশ্চত নয় বরং অতিরিক্ত নেওয়ার 
কারনে সমস্যা হতে পারে সেগুলো আজ মানুষের সামনে অত্যন্ত আকর্ষনীয় কায়দায়
 ভুল তথ্য দিয়ে মানুষের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে।
“বেড়ে ওঠার ডোজ
রোজ রোজ”
কতটুকু
 ভয়ংকর এই অ্যাডটি। ফুড সাপ্লিমেন্টগুলোর যেখানে কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ 
সেখানে এগুলোকে রেগুলার খাবার আর ডোজ(কার্যকরি পরিমান) হিসেবে পরিচিত করানো
 হচ্ছে।
হরলিক্স আবিস্কারের দেশ ব্রিটেনের অ্যাডগুলো দেখলামঃ
“Horlicks
 doesn’t just taste great; one mug contains 12 essential vitamins and 
minerals and is a rich source of Vitamin D – an essential aid to calcium
 absorption”.
“Horlicks contains a wide
 range of vitamins and minerals. Dr Frankie Phillips – an independent 
Nutrition Consultant and Registered Dietician – gives you the good news 
about how these vitamins and minerals are essential for wellbeing.
We all need a variety of essential vitamins and minerals to carry out important roles to keep us well”.
("Horlicks
 খেতে মজা না; এক মগএ 12 অত্যাবশ্যক ভিটামিন এবং খনিজ উপস্থিত রয়েছে এবং 
এটি একটি ভিটামিন D সমৃদ্ধ উৎস - একটি ক্যালসিয়াম শোষক ". "Horlicks 
ধারণকরে একটি ভিটামিন এবং খনিজ বিস্তৃত.
ড
 Frankie Phillips - একটি স্বাধীন পুষ্টিবিজ্ঞান পরামর্শদাতা এবং নিবন্ধিত 
পথ্যব্যবস্থাবিদ্যাবিৎ - প্রদান কিভাবে এই ভিটামিন এবং খনিজ wellbeing জন্য
 অপরিহার্য . আমরা সব অত্যাবশ্যক ভিটামিন এবং খনিজ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ 
ভূমিকা নিয়ে ভাল খবর রাখা আমাদের প্রয়োজন.)
অ্যাডগুলোতে কোথাও লেখা নেই
“বেড়ে ওঠার ডোজ”
“Stronger, Taller, Sharper”
“২ গ্লাস হরলিক্স = ৬৬৬ গ্রাম ইলিশ মাছের সমান আয়রন”
এই অ্যাডগুলো তারা সাবকন্টিনেন্ট ছাড়া অন্য কোথাও দেয় না। কারন তারা সেই দেশে নিষিদ্ধ হয়ে যাবে।
আরো চমকপ্রদ তথ্য আছে।
২০০৪ সালে ডেনমার্কে হরলিক্স নিষিদ্ধ করা হয় অতিরিক্ত ভিটামিন এবং মিনারেল ব্যবহারের কারনে।
UK-তে “Stronger, Taller, Sharper”এই অ্যাডটি নিষিদ্ধ করা হয় ২০০৮ সালে তাও বাংলাদেশী টেলিভিশন এনটিভি এটি প্রচার করেছিল।
আরো মজার বিষয় হল ইউকের হরলিক্সটি ফুড ফরটিফাইড নয়। মানে এতে অতিরিক্ত কোন ভিটামিন অথবা মিনারেল অ্যাড করা হয়নি।
Stronger, Taller, Sharper এখন প্রমানিত?
“এটা প্রমানিত যে হরলিক্স বাচ্চাদের আরো Stronger, Taller, Sharper করে”
প্রথমে নিজকে প্রশ্ন করলাম এই research ইন্ডিয়াতে কেন হোল, ইউকেতে কেন হল না।
ইন্ডিয়া হচ্ছে সেই দেশ যারা সমগ্র পৃথিবীর ৭৫ ভাগ ভেজাল ঔষধ পৃথিবীতে রপ্তানি করে। যাদের ফুড এবং ড্রাগ পলিসি সবচেয়ে দুর্বল।
এটা এমনি একটি research যা GlaxoSmithKline ইন্ডিয়া আর বাংলাদেশে ব্যবহার করে তাদের ইউকের ওয়েবসাইটে এ রকম কোন তথ্য নাই।
দুই দেশ দুই নীতি?
Pharmacy-তে
 একটি টার্ম কমন ব্যবহার করা হয় Slow poisoning এটা অনেকটা Arsenicosis এর
 মত মানে আপনি পানির সাথে বিষ খাচ্ছেন কিন্তু তৎক্ষনাত বুঝবেন না ।বুঝবেন 
৫-১০ বৎসর পরে। নাহ আমি খাবারের বিষের কথা বলছি না এটি হচ্ছে চিন্তার 
পচন।মানুষকে চিন্তা খাওয়াতে পারলে সে সব খায়।
আমার
 এখনও মনে আছে আমাদের বাপ-দাদাদের সময় সফট ড্রিংসগুলো অতিথি আপ্যায়ন এর 
মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল কিন্তু আমাদের জেনারেশন সেইটাকে রেগুলার পানীয় হিসেবে 
গ্রহন করল। তারা মদকে ধরল সেলিব্রশনের একটি উপায় হিসাবে।আমাদের পরবর্তি 
জেনারেশন হয়তবা used to হয়ে যাবে।
বিউটি
 প্রডাক্ট ফেয়ার এন্ড লাভলীকে দেখে এক সময় আমরা গালি দিতাম। কিন্তু সেই 
ফেয়ার এন্ড লাভলী এখন “ফেয়ার এন্ড লাভলী এন্ড ফেয়ার লাভলি” হয়ে গেছে। 
এবং বাজারে এখন বিউটি প্রডাক্ট ছাড়া আসলে অন্য প্রডাক্ট পাওয়া খুবি ভার।
হরলিক্স এক গ্লাস থেকে দুই গ্লাস হয়ে গেছে।
পারফিউম আর ডিওড্রেন্ট এর অ্যাড দেখলে তো গলায় ফাসি দিতে ইচ্ছে করে।
একটা সময় পৃথিবাকে ব্রিটিশরা colonization মাধ্যমে চালাত। সেই colonization হয়তবা শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের চিন্তাকে যে colonized করে ফেলছে সেটা কী আমরা বুঝি?
Reference